শিরোনাম

বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী হালিমের বিরুদ্ধে

 প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০১ অপরাহ্ন   |   মন্ত্রনালয়

বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ গণপূর্তের  নির্বাহী প্রকৌশলী হালিমের বিরুদ্ধে


শেখ ফয়সাল আহমেদ  : 

গণপূর্ত  অধিদপ্তর যেন স্বর্ণের খনি অধিকাংশ প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি কমিশন বাণিজ্য সহ নানা অভিযোগ শূন্য থেকে অনেকে বনে গেছেন অবৈধ অর্থে শত শত কোটি টাকার মালিক, একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ ও অধিদপ্তর সহ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোন অভিযোগ দায়ের করলেও তা অবৈধ অর্থের প্রভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়, ঢাকা গণপূর্ত ই/এম বিভাগ ১০ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি কমিশনার বাণিজ্য ভুয়া বিল ভাউচার করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ সহ রয়েছে নানা অভিযোগ, আব্দুল হালিমের দায়িত্বে নিম্নমানের লিফট সরবরাহ করায় ঝরে গেছে একাধিক নিরীহ প্রাণ সবকিছুর পরও তিনি রয়েছেন বহল তবিয়তে।

অভিযোগের তালিকা অনেক লম্বা বিবরণী  : ২০২২ সালে ঢাকা গণপূর্ত অধিদপ্তরের ই/এম- ৮ নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে স্টাফ অফিসার জোবায়ের আহমেদ স্বাস্থ্যখাতের সব টেন্ডারে আব্দুল হালিমের নির্দেশে ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রতি টেন্ডারে ৫ শতাংশ (প্রাক্কলিত দর) অনুযায়ী কাজ দিয়েছে। পিপিআর অনুযায়ী এলটিএম (লিমিটেড টেন্ডার মেথড) অনুযায়ী দরপত্র হওয়ার কথা থাকলেও তা না করে ওটিএম এর মাধ্যমে টেন্ডার আহবান করে কাজ দিয়ে বিপুল অর্থ লোপাট করেছে। এছাড়াও স্টাফ অফিসার জোবায়ের টেন্ডার আইডি হাইড করে নির্দিষ্ট ঠিকাদার’দের আইডি ও রেট দেখিয়ে ইচ্ছেঅনুযায়ী দাম হাকাতো।

‘সাধারণত পিপিআর অনুযায়ী ইজিপিতে এলটিএম এর বাইরে দরপত্র আহবানের সুযোগ নেই। এলটিএম এর ক্ষেত্রে প্রতি টেন্ডারে ১০ শতাংশ ছাড়ে দর জমা হয়ে, লটারির মাধ্যমে কাজ দেওয়া হয়। এতে সরকারের সিডিউল বেশি বিক্রি হওয়ায় সরকারি কোষাগারে টাকা জমা হওয়ার পাশাপাশি ১০ শতাংশ ছাড়ের কারনে সরকারের অর্থ সাশ্রয় হয়’। হালিম ও জোবায়ের সিন্ডিকেট নিজেদের মনোনীত ব্যক্তিদের প্রাক্কলিত মুল্যে কাজ দেওয়ার কারনে সরকারের ১০ শতাংশ লেসের অর্থ লোকসান হয়। উক্ত ১০ শতাংশ টাকা প্রকৌশলী এবং ঠিকাদার ভাগ করে নেয় তাদের নির্ধারিত কমিশনের বাইরে। একাধিক সুত্র জানায়, স্বাস্থ্য খাতে বেশির ভাগ দরপত্রে মাত্র ১ জন ঠিকাদার অংশ নিয়েছে যা অনুসন্ধান  করলে বেরিয়ে আসবে। অভিযোগ রয়েছে, ‘যারা ৫ শতাংশ টাকা দিতে রাজি হয়নি তাদেরকে ১০ শতাংশ ছাড়ে কাজ নিতে বাধ্য করা হয়েছে’।

২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ মুহুর্তে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বৈদ্যুতিক কাজ ও তিনটি এয়ারকুলার লাগানোর জন্য এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। হাসপাতালের ২য় তলা প্রশাসনিক ভবনে বৈদ্যুতিক ওয়ারিং ও সুইচ পরিবর্তনের জন্য ৩৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, গার্ডেন লাইট ও সিকিউরিটি লাইটের জন্য ২৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ইমার্জেন্সি ব্লাকে এসির জন্য ১৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকা, রেটিনা ব্লাকের এসির জন্য ২৯ লাখ ৫৫ হাজার ও প্রশাসনিক ব্লকে ভিআরইএফ এসির জন্য ২৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সাধারণত অর্থবছরের শেষমূহুর্তে প্রকল্পের নামে অর্থ-বরাদ্দ দিয়ে লুটপাটের সিদ্ধান্ত নিয়ে হালিম-জোবায়ের চক্র  নানা তড়িঘড়ি করেছিলেন।

মূলত আব্দুল হালিম অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন  ও স্বৈরাচার  আওয়ামী লীগের কুষ্টিয়া ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় অর্থবরাদ্দে কোনো সমস্যা হতো না। এছাড়াও ২০২১ সালে আশকোনাস্থ হজ্ব ক্যাম্পের পাওয়ার লাইন, কম্বাাইন্ড সুইচ সকেট পরিবর্তনসহ আনুষঙ্গিক বৈদ্যুতিক কাজের অর্থ বরাদ্দ করানো হলেও নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার অভিযোগ ছিলো। কারিগরি অনুমোদন পেতে নিজ উদ্যোগেই টেন্ডার নেওয়ার প্রস্তাব দেন গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-৮ (মিরপুর) এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম। গণপূর্ত ই/এম উপবিভাগ-১৬ (মিরপুর) একজন উপ- সহকারী প্রকৌশলীর কাছ থেকে প্রাক্কলন পেতে সহযোগিতাও করেন তিনি।

উক্ত প্রাক্কলনের কারিগরি অনুমোদন পেতে আর্থিক সুবিধা নিয়ে স্বাক্ষর করেন আব্দুল হালিম। তখন ২ লাখ ২৮ হাজার ১৪৪ টাকার মুল্যের একটি প্রাক্কলনের কারিগরি চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে আটকে যায় ই/এম-৩, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর টেবিলে। স্মারক নং- ই/এম-৮ ৭০/২৩০৩ ২০২১ সালের ২৫ মার্চে প্রাক্কলনটিতে ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে দায়িত্ব সেরেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হালিম। ই/এম উপ-বিভাগ-১৬ (মিরপুর) উপ-প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলামের নামে প্রাক্কলনটির কাজ দেখানো হয়। প্রাক্কলন প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘প্রাক্কলনের আইটেম সমূহের দর গণপূর্ত প্রধান প্রকৌশলীর অনুমোদিত সিডিউল ২০১৮ থেকে নেওয়া হয়েছে। যাতে প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২,২৮,১৪৪ টাকা। কাজটির ব্যয়ভার ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের কোড নং-৩২৫৮১০৭ অনাবাসিক ভবন খাতের বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনার (এপিপি)ক্রমিক নং-৬৭ হইতে নির্বাহ করা হইবে’। তবে প্রাক্কলনটি প্রেরণের পর অন্যান্য প্রকৌশলী কারিগরি অনুমোদনে স্বাক্ষর করে দিলেও যথা সময়ে স্বাক্ষর করেননি নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হালিম।

তিনি এ প্রাক্কলন আটকে রেখে ভুক্তভোগী আসিফকে মাসের পর মাস ঘুরিয়েছেন, পরবর্তীতে সাক্ষরের বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা সুবিধা নিয়েছেন। গাজীপুর তাজউদ্দিন হাসপাতালের লিফটটি যেই ব্র্যান্ডের তার মেরামত এবং অন্যান্য কাজ নিয়ম অনুযায়ী সেই ব্র্যান্ডকে দেওয়ার কথা থাকলেও অতিরিক্ত টাকার লোভে জনাব আব্দুল হালিম কাজটি দিয়েছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রতিষ্ঠানকে যাদের এই ধরনের কাজের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতাই নাই। যার ফলে লিফটে সঠিক  মেরামত বা মেইনটেনেন্স হয়নি। ফলশ্রুতিতে সঠিক সময়ে লিফট সঠিক তলায় না আসায় এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে। তৎক্ষণাৎ শুরু হয় জনাব আব্দুল হালিমের ম্যানেজমেন্ট এর প্রক্রিয়া, প্রথমে তিনি মৃতের পরিবারকে ম্যানেজ করেন তারপর তিনি তার ঊর্ধ্বতন ও কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করতে টাকা খরচ করেন। তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জেলা প্রশাসনের সহায়তায় তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল গঠন করে।তবে লিফটে আটকে পড়ে মারা যাওয়া মমতাজ বেগমের ছেলে আবদুল মান্নান চিঠির প্রসঙ্গে বলেন, ‘ঘটনা ঘটেছে সকাল সাড়ে ৯টায়।

চিঠিতে বলা হয়েছে সোয়া ১১টায়। প্রকৃত ঘটনা আড়াল এবং দায়ীদের রক্ষা করতেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে’। গণপূর্তের একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে  জানান, ‘হাসপাতালে ছয়টি লিফট রয়েছে। ২৭ প্যাসেঞ্জারের প্রতিটি লিফট কেনায় খরচ হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ লাখ টাকা। দরপত্র অনুযায়ী ইতালির বিখ্যাত মভি ব্র্যান্ডের লিফট সরবরাহ করার কথা। কিন্তু ইলেকট্রিক মোটর ছাড়া কেবিন ও যন্ত্রাংশ দেওয়া হয়েছে চীনের’। এছাড়াও নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করায় লোড বেশি হলেই আটকা পড়ে লিফট। প্রতি মাসে রক্ষণাবেক্ষণের কথা থাকলেও তা শুধু কাগজে-কলমেই দেখানো হয়। তিন শিফটে ৯ জন লিফটম্যান কাজ করে দেখানো হলেও দুই-তিনজনের বেশি খুঁজে পাওয়া যায় না। তৎকালীন সময়ে হাসপাতালের একজন পরিচালক জানান, লিফট সমস্যার কথা প্রায়ই কর্মচারীরা তাঁকে জানান। 

প্রকৌশলী আব্দুল হালিমের নিম্নমানের লিফট সরবরাহের কারণে অকালে ঝরে যায় দুইটি তাজা প্রাণ ১২/০৩/ ২০২৪ ও ০১/১০/২০২৪ সালে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন হাসপাতালে ঘুষের বিনিময়ে অদক্ষ প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে লিফট সরবরাহের কাজ করায় এই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। সেটা নিয়ে দেশের শীর্ষ সকল গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয় এবং একাধিক অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকৌশলী আব্দুল হালিমের নাম উঠে আসলো অবৈধ অর্থ দিয়ে সবকিছু ধামাচাপা দিয়েছেন।

রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সরকারি চাকরিতে যোগদানের পর পরই ঘুরে গেছে ভাগ্যের চাকা একাধিক তথ্য সূত্র বলছে অবৈধ অর্থে গাড়ি-বাড়ি বিপুল পরিমাণ জমি ক্রয় করেছেন সম্পদ বিবরণীর তালিকা রয়েছে অনেক লম্বা। আব্দুল হালিমের পিতা আনোয়ার হোসেন নোয়াখালীর পিডিবিতে সিকিউরিটিতে চাকরি করতেন নিজ জন্মস্থান নোয়াখালী, বিয়ে করেন পাঁচ নাম্বার ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জামাল উদ্দিন মৃধার বোনকে , এবং  বৈবাহিক সূত্রে পরবর্তীতে কুষ্টিয়া সদরে স্থায়ী হন, কুষ্টিয়া সদর বটতৈল ইউনিয়নের পাঁচ নাম্বার ওয়ার্ডে ঈদগাঁও গ্রামে বাড়ি নির্মাণ করেন টিনের , বাবা আনোয়ার হোসেন কর্মজীবনে তেমন কোন সম্পদ করতে না পারলেও ছেলে আব্দুল হালিম এক্ষেত্রে হয়েছেন সফল ।আনোয়ার হোসেন কে বটতৈল ইউনিয়নের বাসিন্দারা স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিসেবে চিনে থাকেন। বটতৈল ইউনিয়নের শিশির মাঠ গ্রামে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন, এই সত্যতা জানতে বটতৈল ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা সত্যতা নিশ্চিত করেন। আইনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য শুধু বাবা মা নয় স্ত্রী শশুর শাশুড়ি সহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামে ক্রয় করেছেন আরো বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি। রয়েছে একাধিক গাড়ি চলাচলের জন্য তবে তার দুইটি গাড়ি অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা এখানেও আইনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্যই এবং অভিনব প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন।রাজধানী ঢাকার  মোহাম্মদপুরে আ/এ- ০৩ নং মৌজায়। এই মৌজায় নির্মাণকৃত বাড়িটির হোল্ডিং নং নাম্বার ১৭৫/৩০ খতিয়ান নম্বর ১২৪১৪ দাগ নং ২১।উল্লেখিত মৌজায় আব্দুল হালিমের জমির পরিমাণ ৪১/৯১ কাঠা, এছাড়া

হোল্ডিং নং ১৭৯/২৪০ খতিয়ান নম্বর ৭৩ ৯ ৩ ২ দাগ নং ২/২৩ উল্লেখিত মৌজায় তার নিজ নামীয় জমির পরিমাণ ২৭.৭২ কাঠা । বাড়ি বাদে দুটি জমি একত্রে ৭৫.৩৬ কাঠা। জমি দুটি আনুমানিক বাজার মূল্য ১০০ কোটির উপরে। একাধিক অনুসন্ধানী তথ্যে দেখা যায়  টেন্ডার মাফিয়া জিকে শামীম এর সাথে নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো।

২০১৯ সালে জিকে শামীম এর মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আবদুল হালিম কে ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বদলি করার অভিযোগ মন্ত্রণালয় পেয়েছিল । অনিয়ম ও দূর্ণীতির কারণে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ২৬-০৫-২০২২ এ আবদুল হালিম কে ইএম বিভাগ-৮ হতে গণপূর্ত ইএম বিভাগ-১০ এ বদলি করা হয়। সে সময় তার বদলির অর্ডার হবার পরে আরো  দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ছিল অভিযোগ।

দুর্নীতি ও অনিয়মের আরো কিছু তথ্য : 

প্রকল্প শেষ, তবু নতুন দরপত্র! দরপত্র আইডি নং ১০০৫৩১৬ এই দরপত্রটি তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পের একাডেমিক এর সাবমার্জিবল পাম্প মটর সেট স্থাপন কাজ এবং দরপত্র আইডি নং ১০০৭৫২৫ এই দরপত্রটি তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পের। সাউন্ড সিস্টেম সংক্রান্ত কাজ। তদন্ত করে দেখা যায় যে প্রকল্পটি ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ হতে শুরু হয়ে জুন, ২০২৪ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপি পর্যালোচনা করে দেখা যায় কাজগুলো অর্ন্তভুক্ত নেই। এখানে দুই ভাবে দূর্ণীতি করা হয়েছে। প্রথমত যে কাজ প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপিতে অন্তর্ভূক্ত নয় তা টেন্ডার করার এখতিয়ার ক্রয়কারীর নেই। ২য় প্রকল্প মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দরপত্র আহবান করা সম্ভব নয়। যদি প্রকল্প কোনো কারণে পুনরায় সংশোধনের পর্যায়েও থাকে তদুপরি সংশোধন অনুমোদন না হলে দরপত্র আহবান করা সম্ভব নয়। কারণ উক্ত কাজ সংশোধন প্রস্তাবে পাশ নাও হতে পারে ।

তবুও দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল  :

দরপত্র আইডি: ১০০৭৬৭০, ১০১৬৪৪৫, ১০০৭৫২৫ সহ আরো ৩টি  দরপত্র আহবান করা হয়েছে: ৭ আগস্ট ২০২৪ — দেশে কার্যত সরকার ছিল না, অধিকাংশ দপ্তর বন্ধ। কিন্তু এই সময়েই ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগ ঘনিষ্ঠদের’ জন্য তড়িঘড়ি করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। উদ্দেশ্য? “চেনা ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়া।” ৭ই মার্চের আলোকসজ্জা, দরপত্র ৩ মাস পরে!

দরপত্র আইডি নং ৯৬২৩৭৯, ৯৬২৩৮০, ৯৯৮০০১ দরপত্রে উল্লেখিত কাজের নামটি ৭ই মার্চ উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি অফিস ও কোয়ার্টার এ আলোকসজ্জাকরন এবং দরপত্র আইডি নং ৯৮৩৩২৯ কাজটি বিশ্ব ইজতেমা মাঠের ভিআইপি বাথরুমে গীজার লাগানোর কাজ। প্রথম তিনটি কাজ ৮ মার্চ, ২০২৪ এ এছাড়া ২০২৪ সালের বিশ্ব ইজতেমা ১ম পর্ব হয়েছে ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারী এবং ২য় পর্ব ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারী। অর্থাৎ কাজটি সম্পন্ন হয়েছে ইজতেমার আগে। কিন্তু বমঢ় পোর্টালে দেখা যাচ্ছে কাজ সম্পন্ন করার অনেক পরে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এ বিষয়ে অই দপ্তরের এক সহকারী প্রকৌশলী বলেন জরুরী প্রয়োজনেঅনেক সময় অনেক কাজ আগে সম্পন্ন করতে হয়। পরে কাগজে কলমে রেগুলারাইজ করতে হয়।” ৭ই মার্চের আলোকসজ্জা কি জরুরী কাজ নাকি হঠাত দূর্ঘটনা জনিত কাজ এটা জানতে চাইলে তিনি বলেন এক্সেন স্যারের সাথে কথা বলেন।

জমিও অধিগ্রহণ হয়নি, তবু কোটি টাকার টেন্ডার! দরপত্র আইডি নং ১০০৭৬৭০ এর কাজটি ৫০টি উপজেলায় টিটিসি স্থাপন প্রকল্প এবং দরপত্র আইডি নং ১০১৬৪৪৫ দশ জেলায় ইঝঞও স্থাপন প্রকল্পের কাজ। এই টেন্ডারগুলো যখন আহবান করা হয় তখন এগুলোর জমি অধিগ্রহণই হয়নি। ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়ে নকশা তৈরি করার পরে সয়েল টেস্ট করে তারপর সিভিল কাজের টেন্ডার করার অনেক পরে এগুলোর টেন্ডার করা উচিত। কিন্তু কি কারণে এগুলো এত তাড়াতাড়ি এবং তারাহুড়ো করে করা হয়েছে ?

বিশ্ব ইজতেমা নিয়েও ছিল বিতর্ক  : দরপত্র আইডি: ৯৮৩৩২৯,২০২৪ সালের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হয় ফেব্রুয়ারিতে। অথচ ১৬ মে আহ্বান করা হয় গিজার লাগানোর টেন্ডার! প্রশ্ন ওঠে—ইজতেমা শেষ হওয়ার ৩ মাস পরে কেন গিজার লাগানোর দরকার পড়ল?

২৪ সালের ৫ই আগস্টের পরে তিনি প্রচার করেছেন বিগত সৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তিনি অনেক নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার কারণ হয়েছেন কিন্তু স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই তিনি দুহাত ভরে কামিয়েছেন ঘুষ দূর্নীতি আর তোষামোদি করে, একাধিক মন্ত্রী এমপির ছিল তার গভীর সখ্যতা তাহলে তিনি বৈষম্যর স্বীকার কোথায় হলেন? 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণপূর্তের একাধিক প্রকৌশলী ও কয়েকজন কর্মচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন উনার বিরুদ্ধে কিছুই বলতে পারব না আপনারা লিখেন লিখলেও কোন লাভ নেই কিছুই হবে না ওনার কারণ উনি সবসময় ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকেন। 

একজন সরকারি কর্মকর্তার এত অর্থ সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন অভিযোগ না আসলে কারো বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধান করে না এই ধারণা ভুল, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সকল তথ্য দুদক গভীরভাবে পর্যালোচনা করে,ও সকল সম্পদের তথ্য খতিয়ে দেখবে দুদক যদি প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা সহ বিভিন্ন শাস্তির সুপারিশ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরবর্তীতে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিমের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মন্ত্রনালয় এর আরও খবর: