শিরোনাম

২৩৫ কোটি টাকার মামলায় পলাতক ফাতেমা জহির মজুমদার : কোম্পানি আইন লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ভয়াবহ অভিযোগ

 প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন   |   কর্পোরেট

২৩৫ কোটি টাকার মামলায় পলাতক ফাতেমা জহির মজুমদার : কোম্পানি আইন লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ভয়াবহ অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার::

২৩৫ কোটি টাকার অর্থনৈতিক অপরাধ মামলায় পলাতক ঘোষিত বেলিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের বর্তমান চেয়ারম্যান ফাতেমা জহির মজুমদার কোম্পানি আইন ভঙ্গ, কোরামবিহীন বোর্ড পরিচালনা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রতিষ্ঠানের আর্থিক কার্যক্রম স্থবির করে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগের মুখে পড়েছেন।

আদালতের নির্দেশ অমান্য, পলাতক ঘোষণা : জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী *১৬ নভেম্বর ২০২৫* তারিখে শুনানির দিন উপস্থিত না হওয়ায় তাকে পলাতক আসামি ঘোষণা করা হয় এবং *অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বাতিল* করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট আমলি আদালতকে। হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আদালতে অনুপস্থিত থেকে তিনি এড়িয়ে যান শুনানি।

কোম্পানি আইন ভঙ্গ ও বেআইনি বোর্ড গঠন : অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন তিনি। একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে ন্যূনতম তিনজন পরিচালক থাকা বাধ্যতামূলক, অথচ বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড বহুদিন ধরে মাত্র একজন স্পন্সর ডিরেক্টর ও একজন ইনডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর নিয়ে চলে আসছে। এর মাঝেই ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বোর্ড সেক্রেটারি শারমিনের যোগসাজশে কোরাম না থাকা সত্ত্বেও নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন ফাতেমা জহির মজুমদার।

ঋণ ও আর্থিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্থবির :  আগস্ট মাস থেকে বোর্ড কোরাম না থাকায় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সিং কার্যক্রম তথা ঋণ নবায়ন, পুনঃতফসিল, পুনঃঅর্থায়ন, ফান্ড ডিসবার্সমেন্ট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে আছে, ফলে গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার চেষ্টা :  অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রবণতা দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বোর্ড কোরাম না থাকা সত্ত্বেও এমডি নিয়োগের উদ্দেশ্যে একজন ব্যাংকারের ইন্টারভিউ নেন তিনি—যেখানে উপস্থিত ছিলেন বেলিজিংয়ের সাবেক এমডি রোকনুজ্জামান, যার পুনঃনিয়োগ আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংক পূর্বেই বাতিল করেছিল। এমনকি বাতিল হওয়া সত্ত্বেও রোকনুজ্জামান বেআইনিভাবে ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ করছেন এবং বোর্ড সেক্রেটারি শারমিন ও ফাতেমা জহির মজুমদারের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চরম আর্থিক সংকটে বেলিজিং : বিগত দুই বছর ধরেই প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এর মধ্যেও চলমান নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নিজস্ব পছন্দের অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ লোকবল নিয়োগ দিয়ে আসছেন বর্তমান চেয়ারম্যান।

যোগ্য পরিচালককে বোর্ডে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ :স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় শেয়ার ক্রয়পূর্বক পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণের আবেদন দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে ব্যক্তিগত সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে বোর্ড সেক্রেটারি শারমিন ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইচ্ছাকৃতভাবে কোরাম গঠন করতে দিচ্ছেন না।

ফলে প্রতিষ্ঠানটি স্বাভাবিক ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং গ্রাহকরা মারাত্মক সমস্যায় পড়ছেন। এ ব্যপারে তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে একাধিকবার ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।

কর্পোরেট এর আরও খবর: