শিরোনাম

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়ে ঘুষ দুর্নীতি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ৬ বছরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেশকার মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে

 প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন   |   অপরাধ

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়ে ঘুষ দুর্নীতি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ৬ বছরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেশকার মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে

শেখ ফয়সাল আহমেদ :

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী অনিয়ম দুর্নীতি ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে শূন্য থেকে অনেকেই বনে গেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক, বিভিন্ন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য সরকার হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ বৈধ রাজস্ব এদের কাছে মোটা অংকের ঘুষ দিলেই সরকারের রাজস্ব কাগজ-কলমে ফাঁকি দিয়ে নিজের পকেট ভারি করে ফেলে আবার এই সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও অধিকাংশ অবৈধ অর্থের প্রভাবে কখনো কার্যকর হয় না সম্প্রতি এমনই একজন কর্মচারীর নাম আলোচনা এসেছে আয়কর বিভাগের কর অঞ্চল ৩/৪৮ এর পেশকার মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে যিনি মাত্র ছয় বছরের ব্যবধানে অনিয়ম দুর্নীতি আর ঘুষের টাকায়  হয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক। 

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের ভেঙ্গুলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ তোফাজ্জল হোসেনের(ফটু নামে চেনে)ছোট ছেলে মেহেদি হাসান তবে তার ডাকনাম জুয়েল, আরেক ভাই সোহেল গোপালপুর ভেঙ্গুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষক ও সুমন কৃষিকাজ করে এবং দুই বোনের মধ্যে ফাতেমা একই বিদ্যালয়ে শিক্ষকত করেন ও আরেক বোন গৃহিণী। অভিযোগ আছে এই দুই ভাই বোন মুক্তিযুদ্ধ কোটায় ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চাকরিতে যোগদান করেন।

ভেঙ্গুলা গ্রামের বেশ কয়েকজন প্রতিবেশী নাম প্রকাশ না করে বলেন মেহেদী হাসানের পরিবার খুব একটা দরিদ্র ছিল না তার বাবা বাজারে কাপড়ের দোকানদারি করতো, তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব ও মুক্তিযুদ্ধ কোটায় তিন ভাই বোনকে সরকারি চাকরি দিয়ে দেন তবে সোহেল ও বোন ফাতেমা শিক্ষক পরীক্ষায় তাদের চেয়েও অধিকাংশ যোগ্য প্রার্থী থাকার পরও শুধুমাত্র দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তাদের দুই ভাই বোনকে এই বিদ্যালয়ে চাকরি দিয়ে দেওয়া হয়, আর তাদের সম্পদ ও চলাফেরায় বিলাসিতা এসেছে ২০১৯ সালে মেহেদী হাসানের চাকরিতে যোগদানের পর অনেকেই বলেন মেহেদী হাসান জুয়েল ৬ বছরের ব্যবধানে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন ইতিমধ্যে গোপালপুর , টাঙ্গাইল সদর ও ঢাকায় বিপুল পরিমাণ সম্পদ ক্রয় করেছেন। এবং অনেকেই দাবি করেন মুক্তিযুদ্ধ কোটায় একই পরিবারের তিনজন সদস্য চাকরি পাওয়া কতটা যৌক্তিক এবং এদের নিয়োগ খতিয়ে দেখা উচিত। 


এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন বিগত সরকারের আমলে অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট ব্যবহার করে অবৈধ ও নিয়মিতভাবে নিয়োগ পেয়েছেন এবং সেই তালিকা ইতিমধ্যে আমরা খতিয়ে দেখছি।


 এলাকার অধিকাংশ মানুষ তাকে দেখতে পারেনা অভিযোগ রয়েছে সবার সঙ্গেই খুব বাজে আচরণ করেন আওয়ামী লীগ চলে গেলেও তার দলীয় প্রভাব এখনো রয়ে গেছে। তিনি যখন গ্রামে আসেন দেখলে মনে হয় এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসেছে চলাফেরা করেন একটি বিলাসবহুল গাড়িতে অথচ একজন পেশকারের বেতন কত?


ইতিমধ্যে পেশকার মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে জমা পড়েছে একাধিক অভিযোগ ও একাধিক গণমাধ্যমে ঘুষ দুর্নীতির রাজস্ব  ফাঁকি দিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সংবাদ, অভিযোগ আছে মেহেদী হাসানের কাছে কোন গণমাধ্যম  কর্মী তথ্য চাইলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এমনকি আমাদের অনুসন্ধানে একজন প্রতিনিধি তার গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পর সেখানে তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য মারমুখী আচরণ করেন বলেন এবং মেহেদী হাসান নিজেও ফোনে হুমকি দেন বিভিন্ন ধরনের  এগুলো করে আমাদের কিছুই হবে না এবং আপনাদেরকে দেখে নিব।


একাধিক গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্যে জানা যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন আবার অনেক প্রতিষ্ঠানকে আয়করের বিভিন্ন আইনের হুমকি দেখিয়ে অর্থ আদায় করেছেন এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে এনবিআর দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ জমা দিয়েছে তবে অদৃশ্য কারণে অধিকাংশ অভিযোগগুলো এখনো আলোর মুখ দেখেনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর অঞ্চল ৩/৪৮ এর একাধিক কর্মচারী বলেন উনি নিজেকে খুবই প্রভাবশালী মনে করেন কাউকে তোয়াক্কা করে না, বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মুক্তিযুদ্ধ কোটায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এই চাকরিবাগিয়ে নিয়েছিলেন টাঙ্গাইলের একজন সংসদ সদস্যের সুপারিশে।


মেহেদী হাসান ২০১৯ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পেশকার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন এবং জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যে অভিযোগ হচ্ছে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ সেই অর্থ তৈরি করেছেন বাড়ি গাড়ি জমি প্লট ফ্লাট বিভিন্ন সম্পদ একটি গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্যের জানা যায় রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও ৬০ ফিট রাস্তার পাশে ২২০/২/১ পীরেরবাগে ১৬ কাঠা জমিতে নির্মিত দশতলা ভবনের ১৮ জন মালিকের মধ্যে তিনিও একজন,, একজন পেশকারের বেতন ১২৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০২৩০ টাকা তো তিনি চলাফেরা করেন বিলাসবহুল জীবনযাপন চলাচলের জন্য রয়েছে দামি গাড়ি গাড়িটি অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা। 


একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে মেহেদী হাসানের স্ত্রী শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে সম্পদ যাচাই করলেই আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে, এবং গণমাধ্যম কর্মীরা মেহেদী হাসানের কাছে সব তথ্য জানতে চাইলে উনি সব সময় ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং বলে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এইসব বিষয়ে অবহিত আছেন। 


নাম প্রকাশে এমবিআর এর বেশ কয়েকজন অর্জন কর্মকর্তা বলেন কারো ব্যক্তিগত অপরাধ দুর্নীতি বা অনিয়মের দায়ভার কখনোই কোন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপরে বর্তানোর কোন সুযোগ নেই। 


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেন গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্নীতির সংবাদগুলো আমরা পর্যালোচনা করে দেখি কেউ যদি অবৈধ অর্থে নিজের ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে সম্পদ ক্রয় অথবা অর্জন করে সেটা খতিয়ে দেখা হবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল ৩/৪৮ এর পরিষ্কার মেহেদী হাসানকে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

অপরাধ এর আরও খবর: