ঠিকাদারকে হত্যা, পরিবারের দাবি স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন করায় খুন

ঠিকাদারকে হত্যা, পরিবারের দাবি স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন করায় খুন

সাভারের আশুলিয়ায় কাজিম উদ্দিন নামের পল্লী বিদ্যুতের এক ঠিকাদারকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের অভিযোগ, সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১৯ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের নির্বাচন করায় নির্বাচনের পর বেশ কয়েকবার তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সেই জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সাভারের আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় নিহতের নিজ গরুর খামারের একটি কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাড়ির পেছনে নিজ মালিকানাধীন গরুর খামারের একটি অতিথি কক্ষে গতকাল রাত্রিযাপন করেছিলেন কাজিম উদ্দিন। ওই ঘরের তালার একটি চাবি কাজিমের কাছে ও আরেকটি তার স্ত্রীর কাছে থাকত। আজ সকালে কাজিমের স্ত্রী দরজার তালা খুলে ভেতরে ঢুকে বিছানার ওপরে স্বামীর মরদেহ দেখতে পান। এ সময় কাজিমের গলায় ধারাল অস্ত্রের আঘাতের জখম ছিল। পরে খবর পেয়ে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-৪ এবং আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। নিহতের ছেলে লিয়াকত হোসেন লিংকন ঢাকা মেইলকে বলেন, গতকাল রাতে আমাদের খামারে একটি গরুর বাছুর হয় আমার বাবা বাছুর দেখতে এখানে আসে। রাত ১১টার দিকে আমার মা এবং আমার ছোটভাই সাকিবও খামারে যায়। সেসময় আমার ভাইয়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হয় পরে আমার বাবা বলেন তোরা বাসায় যা আমি রাতে এখানে থাকব। আমাদের খামারে একটি গেস্টরুম আছে ওই রুমের একটি চাবি আমাদের বাসায় থাকে আরেকটি চাবি এখানেই থাকত। আজ সকালে আমার মা খামারের দায়িত্বে থাকা রাখাল কে আমার বাবা কি করে সেটি জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান বাবা ঘুমাচ্ছেন। পরে আমার মা এখানে এসে দেখেন কক্ষটি বাহির থেকে তালাবদ্ধ। তখন রাখাল এবং আমার মা তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পান আমার বাবার রক্তাক্ত মরদেহ বিছানায় পরে রয়েছে। লিয়াকত হোসেন আরও বলেন, আমার বাবার সঙ্গে এই এলাকায় কারও কোনও শত্রুতা নেই। তবে এবারের নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ সম্পর্কে আমার মামা। তাই আমরা ঈগল প্রতীকের সমর্থন করেছিলাম। এ কারণে আমাদেরকে কয়েকবার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। এমনকি গত মাসে আমার চাচাকে একটি বিচারে মারধরও করা হয়। আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছি। আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই। নিহতদের বড় ভাই গুল বাহাদুর ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা সকল ভাই ভাতিজারা ঈগলের নির্বাচন করেছি। স্থানীয় দেলোয়ার কন্ট্রাক্টরের ছেলে আনোয়ার তার ভাই ইমনসহ ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল প্রতিনিয়ত আমার ভাই-ভাতিজাকে হত্যার হুমকি দেয়। একটা ছোট ভাতিজা আছে তাকেও আবোল-তাবোল কথা বলে। কয়েকদিন আগেও বাড়ির সামনে তাদের মারতে আসে। পরে আমাকে কলি দিলে আমি এসে দেলোয়ার ও আবুল কন্ট্রাক্টরকে ডেকেছি। এসময় এলাকার কিছু মুরুব্বিও উপস্থিত ছিল। আমরা ঈগল করছি এ কারণেই আমার ভাই খুন হয়ে গেছে। আমি এজন্য ন্যায় বিচার চাই। কে খুন করেছে সেটি প্রশাসন তদন্ত করে বের করে। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধিন।

Share This Post

আরও খবর