ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে রমজান মোল্লা(২৪) নামের এক যুবককে পরকীয়ার অভিযোগে আটকের পর শালিশ-বৈঠকে স্যান্ডেল দিয়ে পিটানোর ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসীর সামনে স্যান্ডেল দিয়ে পেটানো ও লাথি মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সোমবার(১২ ডিসেম্বর) মেম্বারের স্যান্ডেল দিয়ে পেটানোর একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে শনিবার(৯ ডিসেম্বর) সকাল দশটার দিকে উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের উমর শেখের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রমজান মোল্লা পার্শ্ববর্তী কুমরাইল গ্রামের দাউদ মোল্লার ছেলে। ভিডিওটিতে দেখা যায় ইউপি মেম্বার স্যান্ডেল দিয়ে ওই যুবকের পিঠে পিটাচ্ছেন, পা দিয়ে লাথি মারছেন এবং তাকে বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করতে দেখা যায়। ভিডিও ও এলাকাবাসী সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের উমর শেখের ছেলে রাজু শেখের স্ত্রীর সাথে প্রায় দুই বছর ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। শুক্রবার(৮ ডিসেম্বর) রাতে রাজু শেখের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাকে আটক করে। পরদিন সকালে এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে এক শালিশ বৈঠক বসে। শালিশে উপস্থিত লোকজনের সামনে ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য(মেম্বার) ছানোয়ার মোল্লা রমজান মোল্লাকে স্যান্ডেল দিয়ে পিটিয়ে পা দিয়ে লাথি মেরে আহত করেন। শালিশে রাজু শেখের স্ত্রীর সঙ্গে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এ ব্যাপারে স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য( মেম্বার) জাহাঙ্গীর ফকির বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে তাদের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক চলে আসছিল। শুক্রবার রাতে সে ওই মহিলার সাথে দেখা করতে গিয়ে বাড়ির লোকজন হাতে ধরা পড়ে। পরদিন শালিশ বৈঠকে ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের মেম্বার ছানোয়ার মোল্লা রমজান মোল্লাকে স্যান্ডেল দিয়ে বেদম আকারে পিটান। এ সময় আমরা তাকে পেটাতে নিষেধ করি এবং বাঁধা দেই। এ বিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার ছানোয়ার মোল্লা এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন,শালিশের মধ্যে উপস্থিত লোকজনদের শান্ত করতে তাকে স্যান্ডেল দিয়ে পিটানো হয়েছে। আমি জুতা দিয়ে কয়েকটি বারি দিয়েছি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রমজান মোল্লার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে মোবাইল নাম্বারটা বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাড়িতে খোঁজ নিয়ে বাড়িতে তালাবন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এ বিষয়ে রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান সোনা মিয়া বলেন, তেতুলিয়া গ্রামের উমর শেখের ছেলে রাজু শেখের স্ত্রীর সাথে প্রায় দুই বছর ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। শুক্রবার রাতে রমজান মোল্লা পার্শ্ববর্তী তেতুলিয়া গ্রামের রাজু শেখের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাকে আটক করে। পরদিন সকালে এ নিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে এক শালিশ বৈঠক বসে। পরে শালিশে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছাড়াছাড়ি করে দেওয়া হয়।