নিশান খান
অটোরিকশা দুর্ঘটনায় গেল বছরের ১৯ নভেম্বর জাবি ৫৩ব্যাচের শিক্ষার্থী আফসানা করিমের নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০ নভেম্বর এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাটারিচালিত সকল প্রকার রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক যানবাহন ক্যাম্পাসে চলাচল নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। বিকল্প হিসেবে ক্যাম্পাসে শাটল বাস চালু করলেও ৩ মাসেও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। জাবি ক্যাম্পাস বিশাল হওয়ায় ক্লাসে কিংবা কাঙ্খিত জায়গায় সহজে এবং দ্রুত যাতায়াত করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। যাদের ব্যক্তিগত বাহন (বাইসাইকেল/মোটরসাইকেল) নেই তাদের দীর্ঘ পথ হাঁটতে হচ্ছে। ক্লাস, পরীক্ষা বা অন্যান্য কার্যক্রমে সময়মতো পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ছে। শারীরিকভাবে চলাফেরায় অক্ষম, প্রতীবন্ধী, অন্ধ, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য এটি অত্যন্ত বড় সমস্যা। শাটল বাস ও প্যডেল রিকশার অপর্যাপ্ততায় ভোগান্তিকে দিন দিন বাড়ছেই। বিকল্প ও স্থায়ী ব্যবস্থা না নিয়েই এরকম সিদ্ধান্তে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিপাকে। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে দাবি প্রতিনিয়তই এই সমস্যার দ্রুত ও কার্যকর সমাধানের দাবি জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।
জাবি শিক্ষার্থী কিশোর সরকার বলেন, পায়ে চালিত রিক্সা ক্যাম্পাসে চলাচলে নানা মুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে : অধিক ভাড়া এবং রিক্সার স্বল্পতা থাকার কারণে সঠিক সময়ে রিক্সা না পাওয়া হয়ে উঠেছে প্রধান সমস্যা। ছেলেদের হল থেকে ডেইরি গেট অব্দি আগের ভাড়া থেকে বর্তমানে বেশি ভাড়া দিতে হয় । শুধুমাত্র ভাড়ার দিক বিবেচনা ব্যতীত অন্যান্য অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের । কিছুদিন আগেই আমার একজন বন্ধু্ যে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাকে দ্রুত মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যেতে রিক্সার স্বল্পতা বুঝতে পারি । এতে করে সময়ের অপচয় কারণে অসুস্থ শিক্ষার্থীর ঝুঁকির পরিমাণটাও আরো বেড়ে যায় ।
বটতলার দোকানী মোঃ ফরমান খান বলেন, অটোরিক্সা বন্ধের কারণে আমরা বাজার-সদাই আনতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়ে যায় এবং অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। অটোআমরা সা করে মেনগেট পর্যন্ত মালামাল নিয়ে আসতে হয় তারপর পায়ে-চালিত রিক্সা করে দোকান পর্যন্ত আনতে হয় এতে সময় ও ভাড়া দুইটাই বেশি লাগে এতে করে আমাদের ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার আজিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়গুলো আমরাও বুঝি। শিক্ষার্থীদের কল্যাণেই আমরা কাজ করি। ইতিমধ্যে নির্দিষ্ট ভাড়ার তালিকা প্রণয়ন করে পায়ে-চালিত রিকশার সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি। কেউ ভাড়ার বেশি আদায় করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিচ্ছি। তাছাড়া বিকল্প হিসাবে শাটল সার্ভিস বৃদ্ধির জন্য কমিটি কাজ করছে। শিক্ষার্থীরা অটোরিক্সার চালুর দাবি নিয়ে আসলে পূনরায় অটোরিক্সার চালুর বিষয়টি আমরা বিবেচনা করে দেখব।