সরকার ‘কৃষক অ্যাপ’-এর কভারেজ এলাকা ২৭২ উপজেলায় প্রসারিত করেছে। ২০১৯ সালে ১৬টি উপজেলায় ধানসহ খাদ্যশস্য সংগ্রহের জন্য চালু হওয়ার পর থেকে এ ডিজিটাল সিস্টেমটি ধীরে ধীরে কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
খাদ্য অধিদফতরের ক্রয় পরিচালক মোহাম্মদ রায়হানুল কবির বাসসকে বলেন, ‘এখন ২৭২টি উপজেলার কৃষকদের তালিকাভুক্ত করা যাবে। উদ্দিষ্ট শস্য বিক্রেতারা ‘কৃষক অ্যাপ’ ব্যবহার করে নাম তাদের নিবন্ধন করছেন।’
তিনি বলেন, আগামী মাসের শুরুতে আমন সংগ্রহ শুরু হবে। তাই দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে এই বিশেষ ২৭২টি উপজেলায় আসন্ন আমন সংগ্রহ ব্যবস্থা অ্যাপের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অধিদফতর নিবন্ধনে ইচ্ছুক আমন উৎপাদনকারী কৃষকদের জন্য ১৫ ডিসেম্বর সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। তবে ২৭২টি উপজেলায় সব কৃষকই নিবন্ধন করতে পারবেন।
কবির বলেন, অধিদফতর এখন পর্যন্ত ঢাকা, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ২৭২টি উপজেলার উপজেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট খাদ্য নিয়ন্ত্রণ মাঠ কর্মকর্তাদের ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে।
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, সিস্টেমটি কৃষকদের সময়, খরচ ও অন্যান্য ঝামেলা কমিয়েছে, এটি ক্রয়ের সাথে জড়িত দুর্নীতি প্রায় নির্মূল করেছে।
খাদ্য অধিদফতরে মহাপরিচালকের কার্যালয়ের খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এটি (কৃষকের অ্যাপ) একটি সময়-সাশ্রয়ী এবং ঝামেলামুক্ত ব্যবস্থা যা একই সাথে সরকারের খাদ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছে।’
বাসস প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার কৃষক সুবাস চন্দ্র ঘোষ বলেন, অ্যাপটি কৃষকদের বিভিন্ন সময় সাপেক্ষ এবং পদ্ধতিগত ঝামেলা থেকে মুক্তি দিয়েছে যার জন্য তাদের অর্থও খরচ হয়।
তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের বারবার উপজেলা কৃষি ও খাদ্য অফিসে (সাইলো/লোকাল সাপ্লাই ডিপো) যেতে হতো এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার জন্য আমাদের শস্য সংগ্রহ করতে হতো… সিস্টেমটি (কৃষকের অ্যাপ) এ প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করে দিয়েছে।’
ঘোষ বলেন, অ্যাপটি তাদের মধ্যস্বত্বভোগীদের এড়িয়ে সরাসরি সরকারি গুদামগুলোতে তাদের শস্য সরবরাহ করতে সাহায্য করেছে। যদিও প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থাটি কিছুটা জটিল বলে মনে হয়েছিল।
একজন খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রোগ্রামটি পাইলট ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে … ২০২২-২৩ অর্থবছরে আসন্ন বোরো মৌসুমে এটি ৩০০টি উপজেলা কভার করবে।
সারাদেশের কৃষকদের কাছ থেকে ৫ লাখ টন আমন ধান ও ৩ লাখ টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
খাদ্য অধিদফতর জানায়, সংগ্রহের জন্য কেজি প্রতি চাল ৪২ টাকা এবং প্রতি কেজি ধান ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষকরা তাদের মোবাইল ফোন নম্বর, পাসওয়ার্ড এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (এনঅঅইডি) ব্যবহার করে গুগল প্লে স্টোর থেকে ‘কৃষকের অ্যাপ’ ডাউনলোড করতে পারেন।