রতন কান্তি দে উখিয়া (কক্সবাজার) :
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ৫ নম্বর ক্যাম্পে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভস্মীভূত হয়েছে প্রায় এক হাজার ৪০ বসতঘর। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টায় রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে উখিয়া ৫ নম্বর ক্যাম্পে এ অগ্নিকাণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল।
তিনি জানান, হঠাৎ ক্যাম্প-৫ এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে এপিবিএন পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এসময় আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট কাজ করেছে। কে বা কারা আগুন দিয়েছে অথবা আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনই বলা যাচ্ছে না। বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানান এপিবিএনের এই কর্মকর্তা।
উখিয়া ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ম্যানেজার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক হাজার ৪০ রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হওয়ায় বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষা পায় ক্যাম্পটি। এতে
৫০ জন রোহিঙ্গা আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রটি শীতকালীন আগুন পোহানোর সময় অসাবধানতাবশত বাড়িতে ধরে যায় এবং বাতাসের গতি থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি কাজ শুরু করেছে জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
তাদের নিজস্ব টুইট বার্তায় আটশত রোহিঙ্গা পরিবার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন এবং তাদেরকে মানবিক সহায়তা প্রদানেও উদ্যোগ নিয়েছে এ সংস্থাটি।
তবে হোয়াটসঅ্যাপে প্রেরিত একটি ভিডিওতে বলতে শোনা গেছে, ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী আরসার সদস্যরা’ এই আগুন ধরিয়ে দিয়ে ক্যাম্পে অরাজকতা সৃষ্টি করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা ক্যাম্পে মানুষ হত্যার পাশাপাশি এখন আগুন দিয়ে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’
রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা হামিদ উল্লাহ বলেন, রাত ১টার দিকে আরসা সন্ত্রাসীরা ৫ নম্বর ক্যাম্পে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে। রাত আড়াইটা পর্যন্ত প্রায় অসংখ্য ঘর পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বর একইভাবে আরও একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৫০টি রোহিঙ্গা বসতঘর পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও অর্ধশতাধিক ঘর।
এর আগে ৫ মার্চ একই ক্যাম্পের অন্য একটি ব্লকে আগুন দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। ওই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় দুই হাজার ২০০ ঘর। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা।