দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে একদিনসহ সাপ্তাহিক দুই দিন মিলে তিন দিনের ছুটি শুরু হচ্ছে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি)। চলবে আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবারই (৪ জানুয়ারি) শেষ কর্মদিবস। এদিন সিভিল প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয়ে বেশ ঢিলেঢালা অফিস করেছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
শুক্র ও শনিবার (৫ ও ৬ জানুয়ারি) সরকারি চাকরিজীবীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এরপর রোববার (৭ জানুয়ারি) ভোটগ্রহণ উপলক্ষে সারাদেশে সাধারণ ছুটি। সেই হিসেবে ৫ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি কাটাবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তিনদিন ছুটির কারণে অনেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন। এজন্য বাস, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে।
এদিকে, ৬ জানুয়ারি সকাল ৬টা থেকে ৮ ডিসেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি। ফলে বাড়ি গেলেও ফিরতে বেশ কষ্ট পোহাতে হবে তাদের।
আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে গত ২৮ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামাং দ্য ডিফরেন্স মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশন্স’ এর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অংশে ৩৭ নম্বর ক্রমিকে দেওয়া ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের চাহিদা মোতাবেক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ৭ জানুয়ারি (রোববার) সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও ভোটগ্রহণের সুবিধার্থে সারাদেশে নির্বাচনকালীন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো।
তবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে শুক্র ও শনিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকর্তা/কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভোটকেন্দ্র ও ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা তথা নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহের লক্ষ্যে ব্যাংক থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন করবে। এসব লেনদেনের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সীমিত সংখ্যক জনবল দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য মহানগরীসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তফসিলি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা আগামী শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকবে।
তবে যেসব কর্মকর্তা/কর্মচারীকে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা বা নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের উল্লিখিত ব্যাংকিং কাজে নিয়োজিত না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ভোটের সময় যান চলাচলেও বেশকিছু বিধিনিষেধ থাকছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে মিলিয়ে ৭২ ঘণ্টা দেশজুড়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞা শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত বহাল থাকবে।
একইসঙ্গে ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলও বন্ধ থাকবে শনিবার মধ্যরাত থেকে ভোটের দিন রোববার মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত।
তবে সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক বা জরুরি কোনো কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল চলতে পারবে। এজন্য রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন নিতে হবে এবং স্টিকার প্রদর্শন করতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসন ও অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষকদের বহনকারী যানবাহনের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন, ওষুধ, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ও এ ধরনের কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ও সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন চলাচলে কোনো বাধা নেই।
এছাড়া বিদেশ থেকে দেশে আসা এবং বিদেশে যাওয়া ব্যক্তির আত্মীয়স্বজনকে বহনকারী যানবাহন চলাচলে বাধা থাকবে না। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে উড়োজাহাজের টিকেট দেখাতে হবে। দূরপাল্লার যাত্রী বহনকারী এবং দূরপাল্লার যাত্রী হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য যেকোনো ধরনের যানবাহন চলাচলেও কোনো বাধা থাকছে না।