নির্বাচনবিরোধী অপতৎপরতা নজরে এনে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘বিএনপি-জামায়াতের গণতন্ত্র ও নির্বাচন বিরোধী অপপ্রচার ও অবরোধ-অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ আশা প্রকাশ করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচনবিরোধী যে কোনো কর্মকান্ড, নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এমন যে কোনো কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে। আমি আশা করি এবং নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানাবো যে, নির্বাচন বর্জন করার জন্য এবং নির্বাচনের বিরুদ্ধে যে লিফলেট বিতরণ ও মাঝেমধ্যে চোরাগোপ্তা যে মিছিল করা হয়, এগুলো নজরে এনে কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমি মনে করি,
নির্বাচন কমিশনের যে ঘোষণা, সেটিকে বাস্তবায়ন করার জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’
নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই তাদের শক্তি, সামর্থ্য, সক্ষমতা প্রকাশ করেছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কমিশন সারা দেশের বেশিরভাগ থানা পুলিশের ওসি বদলি করেছে, ইউএনও বদলি করেছে, ডিসি বদলি করেছে। অনেক প্রার্থীকে তারা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা এবং একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের দৃঢ়তা প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে।’
‘সুতরাং আমি আশা করি যে, নির্বাচনের বিরুদ্ধে যারা এখন মিছিল-মিটিং বা লিফলেট বিতরণ করছে, এটির বিরুদ্ধেও নির্বাচন কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে’ বলেন ড. হাছান।
বিএনপির নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন বর্জন করার যে আহবান জানাচ্ছে সে দিকে কারো কোনো সাড়া নাই। এখন তারা কি করে! লিফলেট বিতরণ করে। এই লিফলেট বিতরণ দেখে পুরান ঢাকায় আর ক্যান্টনমেন্টের দিকের কিছু বানরও পেছনের দিকে লাথি মারে। বিএনপির তারা আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করতে চেয়েছিলো, পারে নাই। তাদের এই আগুনসন্ত্রাসের কারণে নির্বাচনের প্রচারণা ও আমেজেও কোনো ছেদ পড়ে নাই। মানুষ পুরোপুরিভাবে আজকে নির্বাচনমুখী।’
বিদেশিরা বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যাদের দুয়ারে দুয়ারে নির্বাচন বর্জন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচনকালীন সরকার এ সমস্ত কথা বলে ধর্ণা দিতো, তাদের দুয়ার বিএনপির জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের অনেকেই এসেছে এবং আসছে। অর্থাৎ এ নির্বাচনকে তারা গ্রহণ করেছে।’
বিএনপির অনেক কর্মী সমর্থকও নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য উম্মুখ হয়ে বসে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির অনেক সমর্থক আজকে নির্বাচনী প্রচারণার সাথেও যুক্ত হয়েছে। বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তৃণমূল বিএনপির মাধ্যমে, তারপর অন্যান্য দলের মাধ্যমে বিএনপির বহু নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। অর্থাৎ বিএনপির এই নির্বাচন বর্জনের তর্জন-গর্জন সেটি কেউ শোনে নাই, নির্বাচনের ঢামাঢোলের মধ্যে হারিয়ে গেছে।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘বিএনপি প্রথমে মনে করেছিলো আমরা নির্বাচন করতে পারবো না, কিন্তু আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে গুপ্তহত্যার চক্রান্ত করেও তারা মানুষকে নির্বাচন থেকে বিমুখ করতে পারে নাই।আজকে সমগ্র দেশে নির্বাচনী ঝড়। মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য উম্মুখ এবং বিশ্ববাসীও এই নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে বিধায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ওআইসি এবং সার্কভুক্ত দেশগুলো ও আরো বিভিন্ন সংস্থা পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে, পাঠাচ্ছে। নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে বুঝতে পেরে বিএনপি বলছে, নির্বাচনের পরেও তাদের আন্দোলন চলবে। তাই আমি আওয়ামী ঘরানার সকল নেতা-কর্মীদের অনুরোধ জানাবো রাজপথে অতন্দ্র প্রহরীর মতো সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সহসভাপতি ডা. দিলীপ রায়, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পিয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েল, ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এইচ এম মেহেদী হাসান, প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আল মামুন সরকার প্রমুখ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।