অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ সিঙ্গাপুর। বিশ্বের সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সিঙ্গাপুর। কী নেই এখানে। এখানকার সরকার পর্যটকদের জন্য চমৎকার পর্যটন স্পট গড়ে তুলেছেন। সৌন্দর্যের চাদরে ঘেরা দেশটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন ভিড় জমাচ্ছে। খুব ব্যয়বহুল হলেও পরিপাটি ও নিরাপত্তার জন্য এ দেশের সুনামের জুড়ি নেই। পরিবার অথবা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ৬৯৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশটিতে। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে মালয় উপদ্বীপের দক্ষিণতম প্রান্তে, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত। এটি মালয়েশিয়া থেকে জোহর প্রণালী এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর প্রণালী দ্বারা বিচ্ছিন্ন।
অর্কার্ড রোডের দুই দশমিক দুই কিলোমিটার জুড়ে বিস্তীর্ণ শপিং অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাভিনিউকে বলা হয় সিঙ্গাপুরের হৃদয়। সেখানে অবস্থিত হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও শপিংমলগুলো দেখলে মনে হবে যেন খেলনার মতো সাজানো রয়েছে। অর্কার্ড রোডে হাঁটলে সিঙ্গাপুরের চাকচিক্য ও সৌন্দর্যের দেখা মেলে। বিখ্যাত ইয়ন অর্কার্ড শপিং কমপ্লেক্সটি অর্কার্ড রোডেই অবস্থিত।
সাড়ে তিন কিলোমিটার সুউচ্চ মেরিনা জলপ্রপাত দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে অসংখ্য পর্যটক। সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন জাতীয় উৎসব এখানে আয়োজন করা হয়। এখানে রয়েছে বিনোদনের সব রকম ব্যবস্থা। শিশুদের জন্য রয়েছে খেলাধুলার নানা উপকরণ। এখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ কেউ হারাতে চান না। মনোমুগ্ধকর মেরিনা সেতু ও মেরিনা দক্ষিণাঞ্চলকে একীভূত করে আছে হেলিক্স ব্রিজ। লোটাস ফুল দিয়ে সাজানো এখানকার আর্টসায়েন্স মিউজিয়াম দেখার মতো স্থান।
নতুন, পুরোনোর মিশেলে চায়নাটাউন সিঙ্গাপুরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এখানে আপনি সিঙ্গাপুরে বসে চিনাসংস্কৃতি উপভোগ করতে পারবেন। তবে চায়নাটাউনে লালিত ‘চিনাসংস্কৃতি’ সিঙ্গাপুরের অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখানে উল্লেখ করার মতো স্থানগুলো হলো, চায়নাটাউন হেরিটেজ সেন্টার, বুদ্ধদন্তের ধ্বংসাবশেষ মন্দির এবং চায়নাটাউন স্ট্রিট মার্কেট।
সমুদ্রে ঘুরতে ঘুরতে এসে পড়েছেন সিঙ্গাপুরের প্রাণকেন্দ্রে। দেখছেন ১০১ হেক্টরের একটি বাগান। পর্যটকদের কাছে এটি খুব পছন্দের জায়গা। বাগানটিতে রয়েছে নান্দনিক পাতাবাহার গাছের সমাহার। মরুভূমির পাশে অবস্থিত স্কাইপার্ক সিঙ্গাপুরের জনপ্রিয় স্থানসমূহের একটি। মেরিনা বে স্যান্ডস স্কাইপার্ক না দেখলে যেন পুরো সিঙ্গাপুর ভ্রমণই বৃথা। স্কাইপার্কে আসলে আপনার জন্য প্যানোরোমিক ভিউ দিয়ে রয়েছে ছবি তোলার সুযোগ। রয়েছে সূর্যাস্ত দেখার সুযোগও।
সিঙ্গাপুরের অন্যতম নাইটস্পটের নাম ক্লার্কে কুওয়ে। এখানে সূর্যাস্তের পর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হয়। সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্লার্কের নামানুসারে এই স্থানটির নামকরণ করা হয়। এই নাইটস্পটে পর্যটকদের চমৎকার সময় কাটে।
জুরং বার্ডপার্ক একটি বন্যপাখির পার্ক যা ২০ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তীর্ণ। এখানে পাঁচ হাজার পাখি দেখা যাবে। বার্ডপার্কে ৪০০ প্রজাতির পাখি দেখার এমন অভিজ্ঞতা পৃথিবীতে বিরল। কাজেই এই পার্কে আসলে মন আনন্দে ভরে উঠবে।